ভারতের মুল ভূখণ্ডের আদিবাসী বা তফশিলী উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে আদিবাসী বা তফশিলী উপজাতিদের স্বশাসন দেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে ভারতীয় সংবিধানের পঞ্চম তফশিলের মাধ্যমে। ভারতীয় সংবিধানের ২৪৪(১) নং ধারা অনুসারে আদিবাসী অধ্যুষিত রাজ্যে লাগু করা হয় পঞ্চম তফশিল। কোন রাজ্যের তফশিলী উপজাতি অধ্যুষিত এলাকার শাসনকার্য পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালের পরামর্শ অনুযায়ী সেই এলাকার অবস্থার নিরিখে বিশেষ প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রদান করা হয় সেই এলাকার শাসনকার্য পরিচালকমণ্ডলীর ওপর। পঞ্চম তফশিলের মাধ্যমে কেন্দ্র, রাজ্য ও আদিবাসীদের মধ্যে সংযোগ সাধন হয়। বর্তমানে ভারতের ১০ টি রাজ্যে পঞ্চম তফশিল আইন লাগু আছে – অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, গুজরাট, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিসগড়, হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, উড়িষ্যা ও রাজস্থান। পঞ্চম তফশিল অনুসারে আদিবাসী পরামর্শদাতা পরিষদ (Tribal Advisory Council – TAC) এর পরামর্শ অনুসারে রাজ্যের রাজ্যপাল আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার শাসনকার্য দেখভাল করেন। কেন্দ্র বা রাজ্যের কোন আইন পঞ্চম তফশিল এলাকায় লাগু হবে কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন রাজ্যপাল। আদিবাসীদের উন্নয়নের স্বার্থে পঞ্চম তফশিল এলাকার জন্য আইনও প্রনয়ন করতে পারেন রাজ্যপাল। সংবিধান চালু হবার ১০ বছর পর পঞ্চম তফশিল এলাকার বাস্তব পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য গঠিত হয় ধীবর কমিশন। সংবিধান রচনার সভায় পঞ্চম তফশিল নিয়ে আলোচনার সময় আদিবাসী মহাসভা ও ঝাড়খণ্ড পার্টির সভাপতি জয়পাল সিং মুন্ডা যে সমস্ত সওয়াল করেছিলেন, ১০ বছর পর ধীবর কমিশন জয়পাল সিং মুন্ডার সুরেই প্রতিটি রাজ্যে আদিবাসী পরামর্শদাতা পরিষদ (Tribal Advisory Council – TAC) গঠনের সুপারিশ করে। পঞ্চম তফশিল এলাকায় আদিবাসীদের জমি অ-আদিবাসীদের হাতে হস্তান্তরের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা আছে।