LOADING

পাহাড়িয়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কেও এখনও লোকসভা ও বিধানসভার সদস্য হতে পারেননি|

Spread the love

১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হবার পর ১৯৫১-৫২ সালের প্রথম সাধারণ নির্বাচন থেকে বর্তমানের ২০১৯ সালের ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচন অবধি প্রায় সমস্ত নির্বাচনে প্রার্থী হলেও লোকসভা ও বিধানসভার সদস্যপদ অধরাই রয়ে গেছে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের পাহাড়িয়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীর|
ঝাড়খণ্ড রাজ্যের মূলত সাঁওতাল পরগণা ডিভিশনে বসবাসকারী পাহাড়িয়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ইতিহাস প্রায় ৩০০ খৃষ্টপূর্ব পুরোনো| একসময় এই পাহাড়িয়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষদের নিজস্ব রাজ্য পর্যন্ত ছিল| এই পাহাড়িয়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষেরা যথেষ্ট রাজনীতি সচেতন|

১৯৫১-৫২ সালের প্রথম সাধারণ নির্বাচন থেকে বর্তমানে২০১৯ সালের ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচন অবধি প্রায় সমস্ত নির্বাচনে নিয়ম করে প্রার্থী হয়েছেন, কখনও পরিচিত রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে তো কখনও নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে|
১৯৫১ সালে দেশের প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে তৎকালীন বিহার রাজ্যে অধুনা ঝাড়খণ্ড রাজ্যের রাজমহল (দামিন) বিধানসভা কেন্দ্র থেকে চন্দ্রমণি পাহাড়িয়া প্রথমবার জাতির মধ্যে থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করেছিলেন| কোনো প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল চন্দ্রমণি পাহাড়িয়াকে প্রার্থী করেনি| মাত্র ১.৬৩ শতাংশ ভোট পেয়ে জমানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল চন্দ্রমণি পাহাড়িয়ার|
১৯৫৭ সালে ৩ জন পাহাড়িয়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষ ভোটে দাড়াঁন কিন্তু হেরে যান|
১৯৬২ সালে প্রথমবার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল হিসেবে সিপিআই দুইজন পাহাড়িয়া আদিবাসীকে নিজেদের দলের পক্ষ থেকে প্রার্থী করে| সেইবার সিপিআই লিট্টিপাড়া বিধানসভা আসন থেকে সাবনা দিহিরী ও শিকারীপাড়া বিধানসভা আসন থেকে ভগবান দিহিরীকে দলের প্রার্থী করে| সেইবারও এই দুই পাহাড়িয়া আদিবাসী বিধানসভার সদস্য হতে ব্যর্থ হন| সেই বছর আরো তিন পাহাড়িয়া আদিবাসী নির্দল হিসেবে নির্বাচনে লড়াই করেছিলেন|
১৯৬৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিআই দল ফের শিকারীপাড়া বিধানসভা আসন থেকে বি দিহিরী নামে এক পাহাড়িয়া আদিবাসীকে প্রার্থী করে| সেইবার ১৩.৬৮ শতাংশ ভোট পেলেও বি দিহিরী ভোটে হেরে যান|
১৯৭২ সালে ৩ জন, ১৯৮০ সালে ১ জন, ১৯৮৫ সালে ২ জন, ১৯৯০ সালে ৪ জন, ১৯৯৫ সালে ১০ জন, ২০০০ সালে ১ জন, ২০০৫ সালে ৭ জন, ২০০৯ সালে ৬ জন, ২০১৪ সালে ৮ জন পাহাড়িয়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষ ভোটে দাড়াঁন কিন্তু হেরে যান|
১৯৯১ সালে কালীদাস মালতো ও ১৯৯৮, ১৯৯৯ সালে মহেশ মালতো রাজমহল লোকসভা আসন থেকে ভোটে প্রার্থী হলেও হেরে যান| ২০০৫ সালে দুমকা লোকসভা আসন থেকে কালীচরণ মালতো ভোটে প্রার্থী হলেও হেরে যান| ২০০৫ সালে সিমোন মালতোও প্রার্থী হলেও হেরে যান|
এই বছর ২০১৯ সালের ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনে সবথেকে বেশী পাহাড়িয়া আদিবাসী নির্বাচনের ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছেন| সাঁওতাল পরগণা ডিভিশনে ১৮ টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৭ টি বিধানসভা আসন আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত| এই ৭ টি আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত বিধানসভা আসন ছাড়াও অ-সংরক্ষিত নালা বিধানসভা আসন থেকেও পাহাড়িয়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষেরা ভোটে প্রার্থী হয়েছেন| এই বছর মোট ১১ জন পাহাড়িয়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষেরা ভোটে প্রার্থী হয়েছেন| এই বছর বিএসপি দলের পক্ষ থেকে ৪ জন, বিজেপি, সিপিআই, টিএমসি এবং ঝাড়খণ্ড পার্টির পক্ষ থেকে ১ জন করে পাহাড়িয়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষেরা ভোটে প্রার্থী হয়েছেন| দুইজন পাহাড়িয়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষেরা নির্দল হিসেবে ভোটে প্রার্থী হয়েছেন| ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা কখনও কোনো পাহাড়িয়া আদিবাসীকে ভোটে টিকিট দেয়নি|
তথ্যসূত্র – প্রভাত খবর, ঝাড়খণ্ড|ছবি – ইন্টারনেট|

Loading