প্রকৃতি পূজারী আদিবাসীদের পবিত্র উপাসনা স্থল হল “জাহের থান”। কিন্তু সম্প্রতি একটি অনুসন্ধান থেকে উঠে এসেছে যে জাহের থানে থাকার কথা শাল মহুলের গাছ, কিন্তু বয়সজনিত কারনে, পোকামাকড়ের আক্রমনে, ঝড় বৃষ্টিতে উপড়ে যাওয়ার কারনে, বজ্রপাতের কারনে কিংবা মারাত্মক ভূমিক্ষয়ের কারনে জাহের থানের পুরানো শাল মহুলের গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। বহুক্ষেত্রে কোনো গাছই নেই।
কিন্তু আদিবাসীরা প্রকৃতির পূজারী। প্রকৃতিই আদিবাসীদের দেবতা। খোলা আকাশের নিচে প্রকৃতির মাঝে আদিবাসীদের ধর্মস্থান, জাহের থান। সেখানে গাছ পাথরই হল আদিবাসীদের পূজ্য দেবতা। তাই জঙ্গল মহল জুড়ে শুরু হয়েছে “জাহের থানে শাল মহুলের চারা গাছ লাগানোর আন্দোলন”।
এই আন্দোলনের ভাবনার বাস্তবায়নে শুভ সূচনা হয়েছিল ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ির লালজল পাহাড়ে। লালজলের প্রাগৈতিহাসিক গুহার সামনে। আদি পিতামাতাদের স্মৃতিতে। তাঁদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা প্রণাম জানিয়ে গত ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ শাল মহুলের বীজ পুঁতেছিলেন পাহাড়ের পূজারী সত্তোরোর্ধ চুনারাম মাহাত। এর পর গত ২৫ ই আগস্ট, ২০১৯ একইরকমভাবে বেলপাহাড়ি থানার চুটিআ ভুদরি গ্রামের জাহের থানের পাশে শাল গাছের চারা পুঁতলেন ওই গ্রামের তারাস মুরমু, শুকচাঁদ মুরমু এবং মনসারাম হেমরম। এবার গত ৩১ ই আগস্ট, ২০১৯ পুরুলিয়া জেলার জয়পুর থানার মনিপুর গ্রামের জাহের থানে শালগাছের চারা পুঁতলেন প্রভাস জালবানোআর সহ সমস্ত গ্রামবাসীগণ।
এই ভাবনা ক্রমশ: প্রসারিত হতে শুরু করেছে, গ্রাম থেকে গ্রামে। সমস্ত প্রকৃতি পূজারী, প্রকৃতিবাদী, প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে আবেদন, আসুন এবার সবাই জেগে উঠি। প্রতিটি ধর্মীয় স্থানে, খোলা জায়গাগুলিতে শাল মহুলের গাছ পুঁতে এই পৃথিবীকে আগামী প্রজন্মের বাসযোগ্য করে তুলি।