দেখা করার পূর্ব অনুমতি নিয়েও সিআরআইয়ের আধিকারিক আদিবাসীদের চিঠি রিসিভ করতে অস্বীকার করল। এই নিয়ে আদিবাসীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা গেল। প্রসঙ্গত গত ৮ ই সেপ্টেম্বর সোমবার বেলা ১২ টা নাগাদ অ-আদিবাসীদের এসটি সার্টিফিকেট প্রদানের ইস্যুতে কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টরের সঙ্গে দেখা করল পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতির সদস্যরা। মূলত দক্ষিণ ২৪ পরগণার বারুইপুরের মাহাত পদবীধারী সান্তাল সাবকাস্ট লেখা আঠারো জন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে নির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ দায়ের করেছে আদিবাসীরা। এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে শুধুমাত্র আঠারো জন নয়, মোট চব্বিশটা পরিবার ২০০০-২০০১ সাল নাগাদ ঝাড়খণ্ড থেকে কাজের সন্ধানে এসে বসতি স্থাপন করেছিলেন এবং এনারা কোনো ভাবেই আদিবাসী নন! যদিও এই তথ্য খোদ বারুইপুরের মহকুমা শাসক তদন্ত সম্পূর্ণ করার পর তাদেরকে জানিয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রের খবর। এইরূপ ভিন রাজ্য থেকে আসা অ-আদিবাসীদের কীভাবে এসটি সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছে এই নিয়ে আদিবাসীদের মধ্যে অসন্তোষ চরমে। সারা রাজ্য জুড়েই এইরকম হাজার হাজার অ-আদিবাসীদের এসটি সার্টিফিকেট জোগাড় করে প্রকৃত আদিবাসীদের জন্য ধার্য সকল প্রকার সংরক্ষণের সাংবিধানিক অধিকার হরণ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। ফলত বঞ্চিত হচ্ছে প্রকৃত আদিবাসীরা। এজাতীয় অন্যায় অত্যাচারের প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে আদিবাসীরা গত এক বছর ধরে সারা রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন জেলার ডিএম,এসডিও, বিডিও, পিও কাম ডি.ডাবল্যু অফিসারের কাছে মেমোরেন্ডাম জমা দিয়ে চলেছেন। তবে আশ্বাস আর ফাইল স্থানান্তর ছাড়া তেমন কিছুই হয়নি বলে আদিবাসীরা জানিয়েছেন। আদিবাসী এমএলএ – এমপি দের কাছে অনুনয়-বিনয় করেও আশানুরূপ ফল পাননি আদিবাসীরা। বস্তুত আজ সিআরআই’র আধিকারিক গোটা বিষয়টিকে অফিস স্থানান্তরের দোহাই দিয়ে গা ঝাড়া দিয়েছেন।
সমগ্র বিষয়টি রাজারহাটের আদিবাসী ভবনে গিয়ে আদিবাসীদের জানানো উচিত বলে উনি মন্তব্য করেছেন। এছাড়াও সিআরআই এখন এই সকল বিষয়গুলো নিয়ে তদন্ত করে না বলে মত প্রকাশ করে আদিবাসীদের স্মারকলিপির রিসিভ কপি দিতেও অস্বীকার করেন। প্রসঙ্গত গোটা বিষয়টি নিয়ে বারুইপুরের এসডিও অফিসার এবং সিআরআই এর আধিকারিক পরস্পরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন এবং ফলস্বরূপ অ-আদিবাসীরা সহজেই এসটি সার্টিফিকেট হাতিয়ে ছিনিয়ে নিচ্ছে প্রকৃত আদিবাসীদের যাবতীয় সাংবিধানিক অধিকার। আজকের আলোচনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ গোটা আদিবাসী সমাজ। অতি শীঘ্রই এর বিহিত না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে পা বাড়ানোর হুমকি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতি। আজকের ডেপুটেশনে হাওড়া, হুগলী, বর্ধমান, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ইত্যাদি জেলা থেকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের আদিবাসীরা এসে উপস্থিত হয়েছিলেন। সিআরআই আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করেন পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির এক্সিকিউটিভ মেম্বার মিতন চন্দ্র টুডু এছাড়া ছিলেন শিল্পী মুণ্ডা, মহেন্দ্র হেমব্রম এবং ঠাকুর দাস কিস্কু।