LOADING

ছত্তিসগড়ের প্রাত্তন মুখ্যমন্ত্রী অজিত যোগীর তপশিলী উপজাতি শংসাপত্র খারিজের নির্দেশ।

Spread the love
ছত্তিসগড় রাজ্যের রাজনীতিতে প্রাত্তন মুখ্যমন্ত্রী অজিত যোগী এক বহু চর্চিত নাম। ছত্তিসগড় রাজ্যের রাজনীতিতে আদিবাসী সমাজের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেই রাজনীতিতে সাফল্যের চুড়োয় পৌঁছেছিলেন অজিত যোগী। কিন্তু দু’দশক পর সেই আদিবাসী পরিচয় হারাতে বসেছেন অজিত যোগী। ছত্তিসগড় হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত বিশেষ তদন্ত কমিটির রিপোর্টে অজিত যোগীর তপশিলী উপজাতি শংসাপত্র খারিজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায়ের ফলে তপশিলী উপজাতি হিসেবে প্রাপ্য সমস্ত সুযোগ সুবিধে হারাবেন অজিত যোগী ও তাঁর পরিবার। অজিত যোগীর বিধায়ক পদও খারিজ হতে পারে। আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে এত দিন সমস্ত সুযোগ সুবিধাই ভোগ করেছেন অজিত জোগী। তপশিলী উপজাতি হিসেবে  মেক্যানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে প্রথমে অধ্যাপনা করতেন। পরে আইপিএস (১৯৬৮) এবং আইএএস (১৯৭০) পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হন। ১৯৮৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ইন্দোর জেলার জেলা শাসক অজিত যোগীকে রাজনীতিতে আসার আহ্বান জানান। এই আহ্বানের দুই ঘণ্টার মধ্যে অজিত যোগী জেলা শাসকের চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে কংগ্রেস দলে যোগ দেন। ২০০০ সালে নতুন ছত্তীসগঢ় রাজ্য গঠিত হলে, সেখানকার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হন অজিত যোগী। সেই সময় থেকেই অজিত যোগীর বিরুদ্ধে জাত ভাঁড়ানোর অভিযোগ উঠতে শুরু করে। ২০০১ সালে আদালতে তাঁর তপশিলী উপজাতি পরিচয়টিকে প্রথম চ্যালেঞ্জ করেন বিজেপি নেতা নন্দকুমার সাই। ২০১১ সালে মামলা ওঠে সুপ্রিম কোর্টে। সেই সময় একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ে যোগীর শংসাপত্র যাচাই করে দেখার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। ২০১৭-র জুনে সেই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট জমা দেয় আইএএস রিনা বাবাসাহেব কাঙ্গালের নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি। তাতে বলা হয়, অজিত যোগী তপশিলী উপজাতি সম্প্রদায়ের নন। কিন্তু ওই কমিটির রিপোর্টকে ছত্তীসগঢ় হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ জানান অজিত যোগী। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ওই কমিটি পুনর্গঠনের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এত দিন তদন্ত চালিয়ে গত ২১ অগস্ট একটি রিপোর্ট জমা দেয় ওই কমিটি। তাতে বলা হয়, নিজের তপশিলী উপজাতি পরিচয় প্রমাণ করতে পারেননি অজিত যোগী। তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি আইনে অবিলম্বে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে। বাজেয়াপ্ত করতে হবে তাঁর ভুয়ো শংসাপত্র। উপজাতি সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত মারওয়াহি আসন থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন অজিত যোগী। এ বার সেই বিধায়ক পদও তাঁকে খোয়াতে হতে পারে বলে জল্পনা। দীর্ঘ দিন কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অজিত যোগী। কিন্তু ২০১৬-য় কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। নিজে জনতা কংগ্রেস ছত্তীসগঢ় দল গঠন করেন। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের তীব্র সমালোচনা করেছেন অজিত যোগী। ছত্তিসগড়ের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন। অজিত যোগীর ছেলে অমিত যোগী জানিয়েছেন, তদন্তকারী কমিটির রিপোর্টকে উচ্চ আদালতে গিয়ে চ্যালেঞ্জ জানাবেন তাঁরা।

Loading