পূর্ব সিংভুম জেলার ঘাটশিলার ফুলডুংরিতে আদিবাসী সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর উপাসনা স্থল তথা জাহের থানে পঞ্চায়েত অফিস নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। স্বভাবতই স্থানীয় আদিবাসী সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর মানুষেরা প্রতিবাদ করেছে। আদিবাসীদের প্রতিবাদে সাময়িক নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকলেও নির্মাণ কাজ আবার শুরু হয়েছে। এই নির্মাণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গত ৩০.০৮.২০১৯ তারিখ থেকে জামশেদপুর শহরের বিভাগীয় কমিশনারের অফিসের সামনে অনির্দিষ্টকাল ধরে অবস্থান বিক্ষোভ ও অনশনে বসেছেন স্থানীয় আদিবাসীরা। মনসারাম হাঁসদা ও সুকদেব মুরমু নামে দুই আদিবাসী যুবক গত ৫ দিন ধরে অনশন করে আসছেন।
কিন্তু আদিবাসীদের এই আন্দোলন নিয়ে প্রশাসনের কোন মাথা ব্যথা নেই। গত পাঁচ দিন ধরে কোন প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তি আদিবাসীদের সাথে দেখা করে কথা বলার প্রয়োজন মনে করেনি। দুইজন আদিবাসী যুবক গত পাঁচ দিন ধরে অনশন করে এলেও কোন মেডিক্যাল টিম এখনও ঘটনাস্থলে গিয়ে অনশনকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেনি।
ঝাড়খণ্ড রাজ্য নির্মাণ হয়েছিল আদিবাসীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফলে। কিন্তু ঝাড়খণ্ড রাজ্য নির্মাণের ভাগ্য নির্ধারণ আদিবাসীদের হাতে কোনদিনেই ছিলনা। ঝাড়খণ্ড রাজ্য নির্মাণের জন্য যখন লোকসভায় আইন তৈরি করা হচ্ছিল তখন তার রাস আদিবাসীদের হাতে ছিল না। নিছক রাজনৈতিক ফায়দার জন্য তৎকালীন কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ঝাড়খণ্ড রাজ্য গঠন করেছিল। দীর্ঘদিন ঝাড়খণ্ড আন্দোলন করে এলেও ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা সুপ্রিমো দিশম গুরু শিবু সরেনকে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হবার সুযোগ দেওয়া হয়নি। বদলে প্রথম মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল বিজেপি সাংসদ বাবুলাল মারাণ্ডি কে। রাজনৈতিক মহল সেইদিনেই বুঝে গিয়েছিল যে নিছক রাজনৈতিক ফায়দার জন্যই ঝাড়খণ্ড রাজ্য গঠন করেছে তৎকালীন কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। আজ সেই কথা সত্যি প্রমাণিত হচ্ছে। আদিবাসীদের নাম দিয়ে যে রাজ্য গঠন করা হল, সেই ঝাড়খণ্ড রাজ্যেই পদে পদে আদিবাসীরা লাঞ্ছিত, অপমানিত ও বঞ্চিত হচ্ছে।